দারসুল হাদীস

ভালোবাসি যাঁকে
মাওলানা আব্দুল জলীল বাহুবলী

عن أنس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: لايؤمن أحدكم حتى أكون أحب إليه من والده و ولده والناس أجمعين* (بخاري)
     হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কেউ পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও অন্য সকলের চেয়ে অধিক প্রিয় না হই।”  (বুখারী শরীফ : ৭/১)
     পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে। আল্লাহ বলেন, قُلْ إِنْ كَانَ أَبَائُكُمْ وَأَبْنَائُكُمْ وَ أزْوَاجُكُمْ وَ عَشِيْرَتُكُمْ وَ أَمْوَالُنِ اقْتَرَفْتُمُوْهَا وَ تِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَ مَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أحَبَّ إِلَيْكُمْ مِّنَ اللهِ وَ رَسُوْلِه وَ جِهَادٍ فِيْ سَبِيْلِه فَتَرَبَّصُوْا حَتّى يَأْتِيَ اللهُ بِأَمْرِه ـ
     (হে নবী!) আপনি (দুনিয়াবাসীকে) বলে দিন, “যদি তোমাদের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, স্ত্রী-স্বজন, পরিবার-পরিজন, উপার্জিত সম্পদ, ব্যবসা-বাণিজ্য যা নষ্ট হয়ে যাবার ভয় কর, তোমাদের প্রিয় ঘর-বাড়ী (এসব) আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করার চেয়ে বেশি প্রিয় হয় তবে আল্লাহর গজবের অপেক্ষা কর।” (সূরা : তাওবাহ্, আয়াত : ২৪)
     উপরিউক্ত আয়াত ও হাদীসের আলোকে বুঝা যায়- একজন ঈমানদার ব্যক্তির প্রথম বৈশিষ্ট্য হল, আল্লাহ, তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আল্লাহর পথের সকল কাজকে দুনিয়ার অন্য সব বস্তুর চেয়ে অধিক ভালোবাসা। প্রথম বৈশিষ্ট্যটি যে যত ভালোভাবে আয়ত্ব করতে পারবে অপরাপর সকল কাজ তার জন্য সহজ হয়ে যাবে।
     যদি কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ দেহ, পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়েসহ সকল মানুষের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে পারে তবেই সে পূর্ণ মু‘মিন হতে পারবে। আর ভালোবাসার দাবী হলো, প্রেমাস্পদের কাজ- ভালোলাগা-ভালোবাসা, হাসি-কান্না-আনন্দ-বেদনা সব নিজের মধ্যে অর্জন করা।
     অতএব, যারা নিজেদের আশেকে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাবী করেন তারা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা করতেন তা-ই করতে হবে। তিনি যা পছন্দ করতেন তা-ই পছন্দ করতে হবে। তিনি সব চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন নামায। ফরয নামাযগুলো ছাড়াও তিনি আদায় করতেন আওয়াবীন-তাহাজ্জুদ-ইশরাক-চাশতসহ অ-নে-ক নামায। নামায পড়তে পড়তে তাঁর পা ফুলে যেত। নামায-রোযা-হজ্ব-যাকাত-ওয়াদা রক্ষা-পর্দা রক্ষা-মানুষের অধিকার সংরক্ষণ-ইসলামের হক-আত্মীয়-পড়শী-মেহমানের হক পরিপূর্ণভাবে আদায় করতেন। আশেকে রাসূলদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উচিত এ সব বিষয় মেনে চলা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন